বাচ্চা ভয়ংকর কাচ্চা ভয়ংকর pdf
একটু পড়ুন:
বাচ্চা ভয়ংকর কাচ্চা ভয়ংকর
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০১.
রইসউদ্দিনকে দেখলে মনে হবে তিনি বুঝি একজন খুব সাধারণ মানুষ। তাঁর চেহারা সাধারণ (মাথার সামনে একটু টাক, আধপাকা চুল, নাকের নিচে ঝাঁটার মতো গোঁফ), বেশভূষা সাধারণ (হাফহাতা শার্ট, ঢলঢলে প্যান্ট, পায়ে ভুসভুসে টেনিস শু), কথা বলার ভঙ্গিও সাধারণ (যখন বলার কথা ‘দেখলুম’ ‘খেলুম’ তখন বলে ফেলেন ‘দেইখা ফালাইছি’ ‘খায়া ফালাইছি’)। রইসউদ্দিনের কাজকর্মও খুব সাধারণ, একটা বিজ্ঞাপনের ফার্মে তার নয়টা-পাঁচটা কাজ, সারাদিন বসে বসে নানান ধরনের কোম্পানি-ফার্মের দরকারি ছবি, কাগজপত্র, প্লেট ফাঁইলবন্দি করে রাখেন।
দেখতে-শুনতে বা কথা বলতে সাদাসিধে মনে হলেও রইসউদ্দিন মানুষটা কিন্তু খুব সাহসী। দেশে যখন মুক্তিযুদ্ধ হয় তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ষোলো। সেই বয়সে তিনি একেবারে ফাটাফাটি যুদ্ধ করেছিলেন। নান্দাইল রোডে এক অপারেশনে একেবারে খালিহাতে একবার তিনজন পাকিস্তানিকে ধরে এনেছিলেন। এখন তার বয়স বিয়াল্লিশ কিন্তু এতদিনেও তার সাহসের এতটুকু ঘাটতি হয়নি। অফিসের বড় সাহেব একবার তার সাথে কী-একটা বেয়াদবি করেছিলেন, রইসউদ্দিন তার কলার ধরে দেয়ালে ঠেসে ধরে বলেছিলেন, “আর একবার এই কথা বলছেন কি জানালা দিয়ে বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দেব। বলবেন আর?”
বড় সাহেব মিনমিন করে বললেন, “না।” রইসউদ্দিন তখন তাকে ছেড়ে দিলেন। বড় সাহেব এরপর জীবনে আর কোনোদিন রইসউদ্দিনকে ঘটায়নি।
রইসউদ্দিন যে সাহসী তার আরও অনেক প্রমাণ আছে। যেমন ধরা যাক তাঁর পোষা সাপের কথা। সাধারণ মানুষ সাপ পোষা দূরে থাকুক, যেখানে সাপ রয়েছে তার ধারেকাছে যাবে না। কিন্তু রইসউদ্দিন একবার দুটো কেউটে সাপ পুষেছিলেন। কথায় বলে ‘দুধ-কলা দিয়ে কালসাপ পোষা’–কিন্তু সাপ পুষে রইসউদ্দিন আবিষ্কার করলেন সাপ দুধ-কলা মুখে নেয় না, তাদের প্রিয় খাবার হচ্ছে ইঁদুর আর ব্যাঙ। যা-ই হোক, সাপ দুটি একদিন বেড়াতে বেড়াতে পাশের বাসায় হাজির হল, ভয়ংকর হৈচৈ শোনা গেল তারপর দুই মিনিটের মাঝে লাঠির আঘাতে এই সাপের জীবন শেষ। রইসউদ্দিন মনের দুঃখে সাপ পোষাই ছেড়ে দিলেন।
ডাউনলোড: গুগল ড্রাইভ লিংক
কোন মন্তব্য নেই:
Good books