ইসলামের স্বর্ণযুগে ১০টি মুসলিম আবিষ্কার

 ইসলামের স্বর্ণযুগে ১০টি মুসলিম আবিষ্কার


জীবনের সঙ্গে বিজ্ঞানের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ । এককথায় বিজ্ঞান ছাড়া আমাদের জীবন অচল। একথা আজকের দিনে যেমন সত্যি, অতীতকালেও ছিল তেমনি সমান সত্যি। তবে আজকের মতাে অতীতে বিজ্ঞান সাধনা এত সহজ ছিল না। অন্ধকারময় সেই যুগে মুসলমানরাই ছিল বিজ্ঞানের জনক। ইসলাম শুধু মানুষের জীবনে আধ্যাত্মিক বিপ্লব ঘটিয়েছিল তা নয়, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারেও অনবদ্য অবদান রেখেছে। এ সত্য আজকের প্রজন্মের অনেকেই জানে না। 

(১০) সার্জারীঃ মধ্যযুগের মুসলিম বিশে^র সবচেয়ে মহৎ শল্যবিদ এবং আধুনিক শল্যচিকিৎসার জনক বলে গণ্য করা হয় আল জাহরাউয়ি কে । কিতাবুল তাসরিফ’’ চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে লেখা তার বইটি ৩০ খন্ডের একটি বিশ^কোষ যেখানে শল্য চিকিৎসার প্রক্রিয়া ও যন্ত্র নিয়ে তার অবদান প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে আধুনিক কালেও বেশ প্রভাব ফেলেছে ।


 (০৯) কফি: আজকে যে কফি ছাড়া সভ্য মানুষের চলেই না তা কিন্তু নবম শতকের আগে জানা যায়নি । কফির ব্যবহার ধরা হয় ৮৫০ খ্রিষ্টাব্দের পর । ইথিওপিয়া এবং ইয়েমেন এর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে আধুনিক কফির ইতিহাস ।


 (০৮) বিমানের ঃ স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির নাম প্রতিষ্ঠিত হলেও দ্যা ভিঞ্চিরও বহু আগে ওড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন যিনি তিনি হলেন আব্বাস ইবনে ফিরনাস । ৯ম শতাব্দীতে খুব অল্প সময়ের জন্য নিজেকে ওড়াতে সক্ষম হন । অবশ্য পরবর্তীতে সেই মেশিন থেকে পরেই তিনি মারা যান । 


(০৭) বিশ্ববিদ্যালয়ঃ ৮৫৯ খ্রীষ্টাব্দে মরক্কোর ফেজ নগরীতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো কারাওইন বিশ^বিদ্যালয় । ফাতিমা আল ফিহরী নামের এক মহিয়সী নারীর হাত ধরে শুরু হয় এই বিশ^বিদ্যালয় । এই ফেজ নগরীকে তখন বলা হতো পাশ্চাত্যের বাগদাদ । মধ্যযুগে কারাওইন মুসলমান ও ইউরোপের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও জ্ঞান বিনিময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । ১২শ বছর পরেও সেই বিশ^বিদ্যালয় এখনো মরক্কোতে স্বমহিমায় কার্যক্রম চালাচ্ছে ।


 (০৬) বীজগণিত: আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে মূসা আল খোয়ারিজমি - বীজগণিতকে তিনিই প্রথম বিশেষ মর্যাদা সম্পন্ন হিসেবে গড়ে তোলেন । তার রচিত পুস্তক কিতাব আল জাবর ওয়াল মুকাবেলা হতে বীজগণিতের ইংরেজি নাম আল জেবরা উৎপত্তি লাভ করে । ষোড়শ শতক পযর্ন্ত তার অনেক বই ইউরোপীয় বিশ^বিদ্যালয়ে বাধ্যতামূলক পাঠ্য সূচিতে অন্তর্ভূক্ত ছিলো । 


(০৫) আলোকবিদ্যা: পশ্চিমারা তাকে আল হাজেন বলে ডাকে । তাকে বলা হয় আলোক বিজ্ঞানের জনক । কায়রোতে অবস্থানকালীন সময়ে তিনি তার শ্রেষ্ঠ গবেষণা পত্র ‘বুক অব অপটিকস’ রচনা করেন । তাঁর সম্মানে চাদেঁর একটি জ¦ালামুখের নামকরণ করা হয় ‘আল হ্যাজেন’ বা আল হাইথাম । ১০০০ খ্রীষ্টাব্দের দিকেই তিনি প্রমাণ করেন আলোর প্রতিফলনের ফলে সৃষ্ট বিম্ব মানুষ দেখে। মানুষের চোখের নিজস্ব কোন আলো নেই। মানুষ প্রতিফিলিত আলোর সহায়তায় দেখতে পায় । 


০৪) সঙ্গীতঃ ইউরোপের সঙ্গীত জগতের উৎকর্ষ সাধনে মুসলিম মিউজিয়ামশিয়ানরা বিরাট ভূমিকা রেখেছিলো । ধারণা করা হয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে ইউরোপে যে সব বাদ্যযন্ত্র এসেছে সেগুলোর মধ্যে এমন কিছ বাদ্য যন্ত্র যেগুলো থেকেই পরে ভায়োলিনের উৎপত্তি । আধুনিক মিউজিকের অনেক স্কেলও আরবি বর্ণ থেকে এসেছে ।


 ০৩) ইঞ্জিন ঃ ১২শ শতকের দিকে আল জাবারির আবিষ্কৃত এ প্রযুক্তি বিশে^র প্রায় সকল যান্ত্রিক যান বাহনে ব্যবহৃত হচ্ছে । শুধু যান চলাচলেই নয় বরং ভারী জিনিসপত্র উত্তোলনের কাজেও এটি ব্যবহৃত হচ্ছে ।


 ০২) সালফিউরিক এসিডঃ আল-রাযী-৮৪১ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহন করা এই বিখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ছিলেন একজন দক্ষ পার্সিয়ান চিকিৎসক এবং দার্শনিক । তিনি চিকিৎসা বিদ্যা, আল-কেমি,পদার্থবিদ্যা এবং অন্যান্য বিষয়ের ওপর১৮৪টির বেশি বই লিখেছেন । তিনি সালফিউরিক এসিড আবিষ্কার করেন । এছাড়া ইথানল উৎপাদন, বিশোধন ও চিকিৎসায় এর ব্যবহার প্রক্রিয়া আবিষ্কার করেন । 


০১) হাসপাতালঃ মধ্য যুগের (৫০০-১৫০০ খ্রীষ্টাব্দ ) মুসলিম সমাজের অন্যতম অর্জন বা অবদান হচ্ছে হাসপাতাল ব্যবস্থার সূচনা করা । এ সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় খলিফা হারুন-অর-রশিদ কর্তৃক সর্বপ্রথম হাসপাতাল । অপর দিকে ৮৭২ সালে মিশরে প্রথম হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয় । নবম শতকেও তিউনিশিয়াতে একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয় । মধ্যযুগে খ্রিষ্ঠান সম্প্রদায় ও স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করতেন তবে সেটা হাসপাতালের নয় । সেগুলো মূলত ধর্মগুরু দিয়ে পরিচালিত হতো । এবং সেটা কোন দিক দিয়ে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে মুসলিম হাসপাতালগুলোর মতো সেকূল্যার সেবা দিতে সক্ষম ছিলো না

ইসলামের স্বর্ণযুগে ১০টি মুসলিম আবিষ্কার ইসলামের স্বর্ণযুগে ১০টি মুসলিম আবিষ্কার Reviewed by তৌহিদ আজগর - Tawhid Azgor on ১:০৫ AM Rating: 5

কোন মন্তব্য নেই:

Good books

Blogger দ্বারা পরিচালিত.